মুরাদ খান মানিকগঞ্জ থেকে
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-৩ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেকের পরিবারবর্গ এখন শেষ মুহূর্তের নির্বাচনী প্রচারণায় ভোটারদের সাথে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
বিদায়ী বছরের শেষ দিন রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের (৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড) উদ্যোগে সাঁকরাইল বাজারে আয়োজিত নির্বাচনী আলোচনা সভায় মন্ত্রীর সহধর্মিনী, দুই মেয়ে ও নাতিসহ পরিবারবর্গের সদস্যরা নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে গণসংযোগ করেন।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রীর সহধর্মিনী শাবানা মালেক। বিশেষ অতিথি ছিলেন মেয়ে সিনথিয়া মালেক ও সাদিয়া মালেক এবং নাতি আরহান আকমল শরিফ।
শাবানা মালেক বলেন, উন্নয়নের ধারা চলমান রাখতে হলে আবারো নৌকা মার্কায় ভোট দিতে হবে। জাহিদ মালেককে এমপি বানাতে হবে, পুনরায় মন্ত্রী বানাতে হবে। শেখ হাসিনাকে পঞ্চম বারের মতো প্রধানমন্ত্রী বানাতে হবে। তবেই দেশ স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত হবে। জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে। মানুষ উন্নত জীবন যাপন করতে পারবে। তিনি বলেন, বিএনপ রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে ৩০ বছরেও মানিকগঞ্জের কোন উন্নয়ন করেনি। তাই জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর সারাদেশের মত মানিকগঞ্জে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আপনারা দয়া করে ৭ জানুয়ারি সকাল সকাল জাহিদ মালেককে নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন। আপনাদের ভোটে এমপি হবে।মন্ত্রী হবে। মানিকগঞ্জের বাকি উন্নয়ন বাস্তবায়িত হবে। আপনারা সুখে শান্তিতে উন্নত জীবন যাপন করতে পারবেন।
মেয়ে সিনথিয়া মালেক বলেন, আমার বাবা ‘তিলোত্তমা ঢাকা’ গড়ার অন্যতম রূপকার। দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থাই অ্যালুমিনিয়াম কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান। অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র কর্নেল মালেক বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন। তার মত শত শত মানুষ সঠিক চিকিৎসার অভাবে প্রাণ হারিয়েছেন। কারণ ওই সময় মানিকগঞ্জের কোথাও মানসম্মত হাসপাতাল ছিল না। সুচিকিৎসার কোন ব্যবস্থা ছিল না। আমার বাবাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকায় নেয়ার পথে প্রাণ হারায়।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মানিকগঞ্জে চিকিৎসা ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন হয়েছে। আমার দাদর নামে কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। দৃষ্টিনন্দন বহুতল ভবন নির্মাণ করে জেলা হাসপাতালকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। এখন আর মানিকগঞ্জ ও আশপাশের এলাকার মানুষ চিকিৎসার অভাবে মারা যায় না।
ছোট মেয়ে সাদিয়া মালেক বলেন, শুধু স্বাস্থ্য খাত নয়, আমার বাবা মানিকগঞ্জের রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কনভার্ট, হাট বাজার, শিক্ষা-ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিল্প কারখানা সহ অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। আপনাদের ভোটে আবারো এম পি হলে মন্ত্রী হলে মানিকগঞ্জের অসমাপ্ত উন্নয়ন বাস্তবায়িত হবে।
আরহান বলেন, আমি জাহিদ মালেকের নাতি। আমার দাদা একজন ভালো মানুষ। ভালো মনের অধিকারী। তিনি গত
১৫ বছরে মানিকগঞ্জ সাটুরিয়া অঞ্চলের অকল্পনীয় উন্নয়ন করেছেন। আপনারা আমার দাদাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আবারো এমপি বানাবেন। তাহলে শেখ হাসিনা আবারো প্রধানমন্ত্রী হবেন।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ ইসরাফিল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক গড়পাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আফসার উদ্দিন সরকার, জাতীয় শ্রমিকলীগ মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি বাবুল সরকার এবং আওয়ামীলীগ নেতা মো: শামীম হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন গড়পাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সুশীল কুমার সাহা, সাধারণ সম্পাদক সোনামুদ্দিন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এম এ সিফাত কোরাইশী সুমন, জাতীয় শ্রমিকলীগ নেতা এনামুল হক লিটন। বক্তারা ১৫ বছরে সাটুরিয়া-মানিকগঞ্জ অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের বাস্তবচিত্র তুলে ধরে আবারো নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার আহ্বান জানান।
জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য এম এ ইরাদ কোরাইশী ইমনের সার্বিক সহযোগিতা ও ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভাটি একপর্যায়ে জনসভায় পরিণত হয়। তিনটি ওয়ার্ডের শত শত নারী-পুরুষ ভোটার ও বিপুল সংখ্যক দলীয় নেতাকর্মী উৎসবমুখর পরিবেশে জনসভায় অংশগ্রহণ করেন। সকলেই হাত নাড়িয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
