প্রতিনিধি: মোঃ সাইদুর রহমান অনিক
সময়: ১ মার্চ ২০২৪ ৬:২৫ পিএম
সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে সাগর।
সংসারের হাল ধরতে ঢাকায় সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি নিয়েছিলেন সাগর হোসেন (২০)। কিন্তু তার স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই আগুন কেড়ে নিল সব। মা-বাবাসহ সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন সাগর।বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর বেইলি রোডে মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয়েছে তার নামও। নিহত সাগর পাবনার ফরিদপুর উপজেলার হাদল ইউনিয়নের ধানুয়াঘাটা পূর্বপাড়া গ্রামের হাসান আলী ও সাবিনা খাতুন দম্পতির ছেলে। ধানুয়াঘাটা গ্রামের বাসিন্দা ঢাকায় কর্মরত মনিরুল ইসলাম মনির জানান, গারদা শিলড সিকিউরিটি কোম্পানির মাধ্যমে সিকিউরিটি হিসেবে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ক্লথিং ব্র্যান্ড ইপিলিয়ন শোরুমে জয়েন করেছিল ওই ভবনে। সেখানে কর্মরত অবস্থায় আগুনে আটকা পড়ে মারা যান সাগর।
শুক্রবার (১ মার্চ) বিকেলে তার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসীর ভিড়। শোকে পাথর হয়ে গেছেন বাবা-মা। মাঝে মাঝে ছেলের জন্য আর্তনাদ করছেন তারা। তাদের সান্ত্বনা দেয়ার ভাষাও যেন হারিয়ে ফেলেছেন প্রতিবেশীরা। শোকে ভারি হয়ে উঠেছে গ্রামের বাতাস।
সাগরের বাবা হাসান আলী বলেন, ‘দিনমজুরি করে কোন রকমে সংসার চালাই। ছেলেকে লেখাপড়া করানো খুব কঠিন হয়ে পড়েছিল। বাবা ছেলে আলোচনা করে কর্মের সন্ধানে তাকে ঢাকায় যেতে বলি। চার মাস আগে সে ঢাকায় গিয়ে সিকিউরিটি কোম্পানিতে চাকরি শুরু করে। সাগর মাঝে মধ্যে কিছু টাকা পাঠাতো। তা দিয়ে মোটামুটি সংসার চলছিল। গতকাল রাতে শুনতে পাই আমার ছেলে নাই, এখন আমি কি নিয়ে বাঁচবো।’
সাগরের মা সাবিনা খাতুন বলেন, ‘দু-দিন আগে ছেলের সঙ্গে মোবাইলে কথা হয়েছে। বেতন তুলে দশ তারিখে বাড়ি আসবে বলেছিল সাগর। আমি বলেছিলাম টাকার দরকার নাই, তুমি বাড়ি চলে আসো। কিন্তু তার আগেই আমার ছেলেটা পৃথিবী থেকে চলে গেল বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন সাগরের মা।’