জুয়েল শেখ জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার হাট বাজার গুলোতে চলতি আমন মৌসুমে জমে উঠেছে ধান ক্রয় বিক্রয়ের বাজার। তবে ধানের কাঙ্খিত দাম ও ফড়িয়াদের মণ প্রতি অতিরিক্ত দুই কেজি ধান বেশি নেওয়াই স্বস্তিতে নেই কৃষকরা। এতে করে ক্ষতি ও হয়রানির মুখে পড়েছেন তারা।
৪০ কেজিতে মন হলেও ফড়িয়ারা কৃষকদের কাছ থেকে ৪২ কেজি ধান নিলেও বাড়তি ধানের দাম পাচ্ছেন না কৃষক।
তবে আড়ৎদাড় সমিতি বলছেন, সমিতির আওতাভূক্ত আড়ৎদাড়দের বাড়তি ওজনে ধান ক্রয় না করার নির্দেশনা দেওয়া আছে। তবে ফড়িয়ারা এই নির্দেশনা মানছেন না। এ্যাবারে প্রশাসনের বাজার মনিটরিং না থাকায় ফড়িয়াদের দৌরাত্ম বেড়েছে বলে মনে করেন তারা ।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় ১৯ হাজার ৩শ ৯৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯০ হাজার ৯শ ৬৫ মেঃ টন ধান।
বর্তমানে উপজেলার প্রতিটি মাঠে ধান কাটা মাড়াই এখন প্রায় শেষের দিকে। এদিকে কৃষকরা বাজারে ধান বিক্রি করতে গিয়ে পড়ছেন বিড়ম্বনায়। এক শ্রেণির আড়ৎদার ও ফরিয়ারা প্রচলিত ৪০ কেজি মণের বিপরীতে ৪২ কেজি ওজনে ধান ক্রয় করছেন। এতে কৃষকরা আর্থিক ক্ষতির মূখে পড়েছেন। বাজারে প্রকার ভেদে প্রতিমন ধান ১ হাজার ৫০ টা থেকে ১১শ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে।
কৃষকরা জানায়, আড়ৎদার আর ফড়িয়াদের কাছে এক প্রকার জিম্মি তারা। কারণ হিসাবে তারা বলেন, তারা ওজনে যা নিচ্ছেন তাই দিতে হচ্ছে। এরা সবাই মিলে সিন্ডিকেট করেছে।
উপজেলা ধরঞ্জী ইউনিয়নের কৃষক সুলতান মাহমুদ সুজন বলেন, প্রতিমণ ধানে ১ থেকে দেড় কেজি করে বেশি নিয়েছে। বেশি না দিলে ধান নিতে চায় না ব্যাপারীরা। উপজেলার গোপালপুর গ্রামের কৃষক আব্দুস ছালাম অভিযোগ করে বলেন, আড়ৎদার বা ব্যাপারীদের নিকট ধান বিক্রি করতে গেলে মন প্রতি বেশি ধান দিতে তারা বাধ্য করছে । না দিতে চাইলে তারা কিনবে না বলে জানায় ।
উপজেলার বাগজনা ইউনিয়নের কুটুহারা গ্রামের কৃষক রেজুয়ান হোসেন বলেন, ফড়িয়া আড়ৎদার মিলে সিন্ডিকেট তৈরি করেছে।
এরা কৃষকদের জিম্মি করে ওজনে ধান বেশি নিচ্ছে। সেখানে আমাদের করার কিছুই থাকে না।
উপজেলার পাগলা বাজার এলাকার আড়ৎদার নুরনবী হোসেন বলেন, ধান অপরিস্কার ও বালু থাকার কারণে মণে এক থেকে দেড় কেজি বেশি নেওয়া হয়। উপজেলার কোতোয়ালীবাগ, রতনপুর, আটাপাড়া ও শালাইপুর বাজারের একাধিক আড়ৎদাড়দের নিকট জানতে চাইলে তারা বলেন, মিলাররা ধান নেওয়ার সময় ৭০ কেজিতে ১ কেজি ধান বেশি নেন। সে কারণে আমাদেরও নিতে হয়।
উপজেলা আড়ৎদাড় সমিতির সভাপতি আইনুল হক বলেন, প্রচলিত ওজনের বাড়তি ওজন নিয়ে ধান ক্রয় না করতে সকল আড়ৎদারদের নিষেধ করা আছে।
কিন্তুু উপজেলার বাহির থেকে কিছু ফড়িয়া এসে আমাদের এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাজার দরের চেয়ে বেশি দাম দিয়ে মণ প্রতি দুই কেজি ধান বেশি নিচ্ছে। এতে কৃষকরা প্রতারিত হচ্ছে।
জেলা কৃষি বিপনণ কর্মকর্তা রতন কুমার রায় বলেন, এ ব্যাপারে কোন কৃষক লিখিত অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে অচিরেই বিভিন্ন হাট-বাজারে মনিটরিং এ বের হওয়া হবে। ধান ক্রয়ে ওজনে অতিরিক্ত নেওয়ার ঘটনা পাওয়া গেলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।