এম,এ,মান্নান,নিয়ামতপুর(নওগাঁ) প্রতিনিধি
বাংলাদেশের প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শনের মধ্যে মান্দা মন্দির একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম। এটি রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলায় অবস্থিত। মন্দিরটি ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় গুরুত্ব বহন করে এবং বহু বছর ধরে স্থানীয় জনগণের উপাসনাস্থল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
মান্দা মন্দিরটি মূলত একটি শিব মন্দির। স্থানীয় জনগণ একে “মান্দা শিব মন্দির” নামেও চেনে। মন্দিরটির স্থাপত্যশৈলী প্রাচীন বাংলার মন্দির নির্মাণরীতির অনুসরণে গঠিত। মন্দিরের গায়ে কারুকার্য খচিত নিখুঁত অলংকরণ, যা বাংলার ঐতিহ্যবাহী টেরাকোটা শিল্পের পরিচায়ক। এর উচ্চ মাথা, খিলানযুক্ত প্রবেশদ্বার ও অলংকৃত দেয়াল দর্শনার্থীদের নজর কাড়ে।
প্রতি বছর এখানে শিবরাত্রি উপলক্ষে বিশেষ পূজার আয়োজন করা হয়। তখন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পূণ্যার্থীরা এখানে এসে পূজা দেন ও মানত করেন। সেই সঙ্গে বসে একটি বিশাল মেলা, যা ধর্মীয় গুরুত্ব ছাড়াও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মিলনমেলার রূপ নেয়।
মান্দা মন্দির শুধু একটি ধর্মীয় উপাসনাস্থল নয়, এটি আমাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের এক মূল্যবান প্রতীক। এটি আমাদের দেশের প্রাচীন স্থাপত্য ও ধর্মীয় সহাবস্থানের এক উজ্জ্বল নিদর্শন। তাই মন্দিরটি সংরক্ষণ ও পরিচর্যা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।
মান্দা মন্দিরের সঠিক স্থাপিত সাল সম্পর্কে নির্দিষ্ট প্রামাণ্য তথ্য পাওয়া যায় না, তবে ধারণা করা হয় এটি ঊনবিংশ (১৯শ) শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল। এটি একটি শিব মন্দির, এবং স্থানীয় জমিদার বা সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবার কর্তৃক নির্মাণ করা হয়েছিল বলে মনে করা হয়।
মন্দিরটি প্রাচীন স্থাপত্যরীতি অনুযায়ী নির্মিত এবং এতে টেরাকোটার কারুকার্য দেখা যায়, যা বাংলার ঐতিহ্যবাহী মন্দির নির্মাণশৈলীর পরিচায়ক। অনেক গবেষক ও স্থানীয় ইতিহাসবিদদের মতে, এটি ব্রিটিশ আমলে নির্মিত হলেও এর উপর কোনও নির্মাণফলক বা শিলালিপি না থাকায় নির্দিষ্ট সাল নিশ্চিত করা কঠিন।