স্টাফ রিপোর্টারঃ
বগুড়া গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউপি’র জনপ্রতিনিধি (মেম্বার) ও উক্ত ইউনিয়নের আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ এবং অত্র এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও মাস্তান শ্রেণীর লোকদের নামে গাবতলী মডেল থানায় একাধিক লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায় যে, গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের রানীরপাড়া গ্রামের মৃতঃ জয়নাল প্রাং এর ছেলে মিনার হোসেন প্রাং (৪২) এবং একই ইউনিয়নের মড়িয়া গ্রামের মৃতঃ আনোয়ারুল মন্ডলের স্ত্রী জাহানারা (৫৬)। বাদী হয়ে গাবতলী মডেল থানায় হাজির হয়ে একই ইউনিয়নের রানীরপাড়া গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে ৮নং মহিষাবান ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধি ৫নং রানীরপাড়া ওয়ার্ডের মেম্বার সুলতান মাহমুদ (৪২) ও তার সহযোগী শহিদুল সাকিদার (৩৮), সবুজ সাকিদার (৩৬), মহিদুল সাকিদার (৩০)। এছাড়াও একই গ্রামের মৃত জালাম সাকিদার এর ছেলে আবুল কালাম আজাদ (৬০), আজিজার রহমান (৫৫) গং এর বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ দায়ের করে।
ভুক্তভোগী বাদী মিনার হোসেন প্রাং জানায়, বিবাদী সুলতান মাহমুদ মহিষাবান ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং তার সহযোগী শহিদুল সাকিদার এর কাছ থেকে গত ৮মাস আগে উক্ত বিবাদীদের কাছ থেকে পৃথক ভাবে ৪টি ফাঁকা চেকের পাতা গোপন রাখার শর্তে ২লাখ টাকা গ্রহন করে। সেই সাথে চেকের বিষয়টি কাউকে বললে ডাবল টাকা ফেরতসহ মামলা দিয়ে হয়রানী করা হবে বলে বিবাদীদ্বয় শর্ত দেয়। বাদী প্রতি মাসে ৬০হাজার করে ৮মাস সুদের টাকা পরিশোধ করে। বাদী গত ৬জানুয়ারি-২৪ইং তারিখে আসল ও সুদসহ সমুদয় টাকা পরিশোধ করে। বর্তমানে বাদী বন্ধককৃত ৪টি চেকের পাতা ফেরত চাইলে তারা ফেরত দিবে দিবে বলে তাল বাহানা করছে। এবিষয়ে বিবাদীদ্বয়কে কিছু বলতে গেলে তারা বলে যে, বেশী বাড়াবাড়ি করলে চেকের মামলা দিয়ে হয়রানী করবে এবং পুনরায় সুদে আসলে টাকা ফেরত দিতে হবে বলে নানা রকম ভয়-ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
অপরদিকে আরেক ভুক্তভোগী বাদী জাহানারা জানায়, বিবাদী সুলতান মাহমুদ মহিষাবান ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এলাকার মানুষ মুখ খুলতে সাহস পায় না। বিবাদীগণ আ.লীগের প্রভাব খাঁটিয়ে অত্র এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আসছে। বিবাদীগণের ভয়ে তার একমাত্র ছেলে জাকির হোসেন বাড়ী থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ভুক্তভোগীর বাড়ীর জমি ক্রয় করার বিষয় নিয়ে বিবাদীগণ তাদের উপর প্রভাব খাঁটিয়ে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে ক্ষয়-ক্ষতি করার চেষ্টা করচ্ছে। গত কয়েকদিন পূর্বে ছাগলে গাছ খাওয়ার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিবাদীগণ পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে বিবাদী শহিদুল সাকিদার তার হাতে রিভালভার ও রামদা, বিবাদী সবুজ সাকিদারের হাতে ডেগার, বিবাদী মহিদুল সাকিদারের হাতে লোহার রড, বিবাদী আবুল কালাম আজাদ হাতে বার্মিজ চাকু নিয়ে বেআইনী ভাবে দলবল নিয়ে তাকে হত্যার জন্য আক্রমন করে। ভুক্তভোগী প্রাণ রক্ষার জন্য চিৎকার শুরু করে এবং ঘরের দরজা লেগে দিয়ে জীবন রক্ষা করে। এতে বিবাদীগণ তাকে মারতে না পেরে হুমকি দেয় যে, আজ জীবনে বেঁচে গেলি। পরবর্তীতে তোকে ও তোর পরিবারের লোকজনকে যেখানেই পাবো, সেখানেই শেষ করে, গুম করে ফেলবো। প্রয়োজনে তোর বাড়ী ঘরে আগুন লাগিয়ে নিঃশেষ করে দিবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়।
অন্যদিকে আরেক ভুক্তভোগী মহিষাবান রানীরপাড়া গ্রামের হাফিজুর মন্ডলের ছেলে মহব্বত মন্ডল জানায়,বিবাদী ৮নং মহিষাবান ইউপি’র জনপ্রতিনিধি ৫নং রানীরপাড়া ওয়ার্ডের মেম্বার সুলতান মাহমুদ মহিষাবান ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং তার সহযোগীরা ক্ষমতার দাপট খাঁটিয়ে দীর্ঘদিন যাবত তার বসত বাড়ির পাশে নিয়মিত জুয়ার আসর এবং অবৈধ নারী দিয়ে হর হামেশায় অনৈতিক ব্যবসার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ভুক্তভোগী এসমস্ত কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করলে তাকে মারবে কাটবে বলে বিভিন্ন রকম ভয়-ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
এতে বিবাদীদের সাথে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোন যোগাযোগ পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে গাবতলী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশিক ইকবাল বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং জানায় যে, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ আইনগত বিধি-ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি।