মোহাম্মদ আব্দুল করিম, নিয়ামতপুর, নওগাঁ, প্রতিনিধি: ভূমি (Land) মানুষের আবেগের যায়গা । এই ভূমি থেকেই মানুষের সৃষ্টি, ভূমিতেই মানুষের বেড়ে উঠা, আর এই ভূমিতেই মানুষের শেষ ঠিকানা । মানুষ আয় করে ভূমিতে বিনিয়োগ করে, আবার বিপদে পড়লে এই ভূমিই বিক্রয় করে । এই ভূমির সাথে মিশে আছে মানুষের সুখ-দুঃখের কাহিনী মিশ্রিত অজস্র আবেগের গল্প । মানুষের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ এই ভূমির #স্বত্ব (Title) তৈরি হয় সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে । #মূল_দলিল (Original Deed) থেকে ভলিয়মে (Volume) অবিকল নকল করে থাকেন নকলনবিশগণ ।
সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের এই নকলনবিশগণের মাধ্যমেই জনগণের ভূমির স্বত্বের #স্থায়ী_রেকর্ড (Permanent Record) সৃষ্টি হয় । স্থায়ী রেকর্ড প্রস্তুতকারী এই নকলনবিশগণ Work and Pay -এর ভিত্তিতে এই কার্যালয়ে কাজ করে থাকেন । সাব-রেজিস্ট্রি অফিস একটি সরকারি কার্যালয় । এই সরকারি কার্যালয়ে জনগণের ভূমির স্বত্বের স্থায়ী রেকর্ড তৈরি হচ্ছে বে-সরকারি লোকজনের মাধ্যমে । ভূমির স্বত্বের মতো গূরুত্বপূর্ণ রেকর্ড বে-সরকারি লোকজনের মাধ্যমে প্রস্তুত করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং যৌক্তিকতা বিবর্জিত । এখানেই নকলনবিশগণের চাকুরি জাতীয়করণের (Nationalisation) প্রধান যৌক্তিকতা নিহিত ।
একজন নকলনবিশ যদি দৈনিক মান (Standard) বজায় রেখে নিয়মিত কাজ করে থাকেন । তাহলে মাস শেষে তাঁর পারিশ্রমিক দাঁড়ায় ৭-১০ হাজার টাকা মাত্র । এখানেও রয়েছে শুভংকরের ফাকি। সময়মতো বালাম সরবরাহের অভাবে বছরের অনেক সময়ই তাদের কোনো কাজ থাকেনা। তাদের চাকুরি No-Work-No-Pay ভিত্তিতে হওয়ায়, এই সময়টিতে তারা কোনো পারিশ্রমিকও উত্তোলন করতে পারেন না। দ্রব্য মূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির বাজারে উপর্যুক্ত অংকের টাকায় কিংবা No Work পিরিয়ডে একজন নকলনবিশের পক্ষে পরিবারসহ জীবনধারণ করা কতটা দূর্বিষহ, তা কেবল ভুক্তভোগীই ভালো বলতে পারবেন ।
এখানে প্রশ্ন আসতে পারে, এই সমস্যা তাঁদের পারিশ্রমিক বৃদ্ধির মাধ্যমেও করা যেতে পারে । জাতীয়করণ করা কি প্রয়োজন? কিন্তু ভূমির সত্বের মতো সরকারি দলিল (Public Document) বে-সরকারি লোকজনের মাধ্যমে প্রস্তুত করা কতটা যৌক্তিক বলে আপনার মনে হয়?