ঢাকাSunday , 3 November 2024
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. কৃষি বার্তা
  6. খেলাধুলা
  7. গনমাধ্যাম
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. তথ্যপ্রযুক্তি
  11. ধর্ম
  12. নগর জীবন
  13. প্রবাসের খবর
  14. ফ্যাশন
  15. বিনোদন
আজকের সর্বশেষ সবখবর
  • বগুড়ায় শীতের শুরুতেই খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত গাছিরা

    admin
    November 3, 2024 10:18 pm
    Link Copied!

    স্টাফ রিপোর্টারঃ
    বগুড়া জেলার বিভিন্ন গ্রাম গঞ্জে খেজুর রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। শীত মৌসুমকে কেন্দ্র করে কুয়াশায় ভোর বেলায় লতা-পাতা ও ঘাসের ডগায় শিশির বিন্দু জমে থাকাই জানান দিচ্ছে গ্রামীণ জনপদে শীতের আগমনী বার্তার মাধ্যমে জানান দিচ্ছে।

    সরেজমিনে দেখা যায়, বগুড়া জেলার ১২টা উপজেলায় বিভিন্ন গ্রাম গঞ্জের গাছিরা শীতের আমেজ শুরুর সাথে সাথে আগাম রস পাওয়ার আশায় কিছু গাছি গাছের পরিচর্যা শুরু করছে। শীতের মৌসুম শুরু হতে না হতেই খেজুরের রস আহরণের জন্য গাছিরা খেজুর গাছ প্রস্তুত করছে। হাতে দা ও হাঁসুয়া নিয়ে, কোমরে ডোঙা বেঁধে নিপুণ হাতে গাছ চাচা ছেলা করছেন গাছিরা। পূর্বে বগুড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলার গ্রাম গঞ্জের মাঠে মাঠে ফসলি জমিতে কিংবা রাস্তার পাশে, বাড়ির পাশে জমির আইলে সারি সারি খেজুর গাছ বেশি দেখা গেলেও এখন আর সেই রকম বেশি খেজুর গাছ চোখে পড়ে না।

    বগুড়া জেলার কাহালু উপজেলার মালঞ্চা গ্রামের, শাজাহানপুর উপজেলার জামাদার পুকুর, টেংরা মাগুর, নন্দীগ্রাম উপজেলার বিজরুল,লোকপাল গ্রামের, আদমদীঘি উপজেলার গাছিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কার্তিক মাস থেকে রসের জন্য খেজুর গাছ প্রস্তুত করা শুরু হয়। শীত যত বেশি হয়, গাছ থেকে তত রস বেশি পাওয়া যায়। অগ্রহায়ণ মাস থেকে মাঘ মাস এই তিন মাস খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করা হয়। গাছিরা প্রতিদিন বিকালে ছোট-বড় কলসি মাটির পাত্র গাছে বাঁধা হয়, আর সকালে রস সংগ্রহ করা হয়। কেউ কেউ কাঁচা রস এলাকার বিভিন্ন স্থানে ও হাটে-বাজারে খাওয়ার জন্য বিক্রি করেন।

    অপরদিকে জানা যায়, কেউ কেউ সকালেই এই রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করে। সপ্তাহের চার দিন রস সংগ্রহ করা যায়। এর ফলে গাছের রস বেশি পড়ে। গাছ এক বার ছাঁটলে ৩-৪ দিন রস সংগ্রহ করা হয় এবং পরবর্তীতে ৩ দিন শুকাতে হয়। এই ভাবে কাটলে গাছের রস সুমিষ্ট হয়। রস সাধারণত অগ্রহায়ণ হতে মাঘ মাস পর্যন্ত সংগ্রহ করতে হয়। রস সংগ্রহের পর হাড়ি পরিষ্কার করে রৌদ্রে শুকাতে হয় অথবা আগুনে ছেকে নিতে হয়।

    সেই সাথে গ্রামীণ জনপদের আসন্ন নবান্ন উৎসবের অপরিহার্য উপাদান খেজুরের রস আর গুড়। শীতের সকালে নানা ভাবে খাওয়া হয় এই রস। শীত কিছুটা বাড়লেই শুরু হয় রস সংগ্রহ, রস থেকে তৈরি হয় গুড় ও পাটালি। যার স্বাদ ও ঘ্রাণ মানুষকে মুগ্ধ করে। তাছাড়া খেজুরের রসের তৈরি পিঠা-পুলি আর পায়েস যেন শীতকে করে তোলে আরো পরিপূর্ণ। কিছু দিনের মধ্যে আমন ধান ঘরে তোলার পালা ফলে নতুন ধানের পিঠা, পুলি ও পায়েশ তৈরির ধুম পড়ে যাবে গ্রামে গ্রামে। তাছাড়া খেজুরের গুড় দিয়ে মুড়ির মোয়া, চিড়ার মোয়া ও মুড়ি খাওয়ার জন্য কৃষক পরিবার থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের কাছে শীতের মৌসুমে এ রস দিয়ে হরেক রকম খাবার অতি প্রিয় হয়ে ওঠে ।

    কাহালু উপজেলার মালঞ্চা গ্রামের রফিকুল ইসলাম বেশ কয়েক বছর ধরে খেজুর গাছ ঝুড়ার কাজ করে, প্রতি বছর দুই থেকে তিন হাজার খেজুরের গাছ ঝুড়ার কাজ করে থাকে, প্রতিটি খেজুরের গাছের জন্য নিয়ে থাকেন ৮০ থেকে ১শত টাকা, এবার চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ২শতটি খেজুর গাছ ঝুড়ার কাজ করেছে, আগামী মাস পর্যন্ত গড় ২ হাজার ৫শত খেজুর গাছ ঝুড়ার কাজ করবে বলে সে আশাবাদী। তিনি এই কাজ করে প্রতি বছরে প্রায় দেড় লক্ষ থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকে।

    কাহালু উপজেলার মালঞ্চা গ্রামের গাছি শাহ আলম, প্রতি বছর ৮০ থেকে ১শতটি খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে এবার ৮০টি খেজুর গাছ মালিকদের কাছে থেকে প্রতি গাছের জন্য ৩ কেজি গুড় দিবে বলে বর্গা নেন। রস সংগ্রহ করার জন্য বিভিন্ন গ্রামে হাতে দা ও হাঁসুয়া নিয়ে, কোমরে ডোঙা বেঁধে নিপুণ হাতে গাছ চাছাছোলা পরিচর্যা করছে। তিনি প্রতি বছর গুড় থেকে ৯০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকে।

    শাজাহানপুর উপজেলার সাহেব আলী মাত্র ১৬ বছর বয়স থেকেই খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করে। এতে ১শত ৪০টি খেজুর গাছ মালিকদের কাছে থেকে প্রতি গাছের জন্য তিন কেজি গুড় দিবে বলে বর্গা নেন । তিনি ৬৩ বছর জীবনে খেজুর গাছের রসের টান এখন পর্যন্ত ঝুঁকি নিয়েই কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি প্রতি বছর গুড় থেকে এক লাখ টাকা থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকে।

    নন্দীগ্রাম উপজেলার বিজরুল গ্রামের গাছি আব্দুল আলিম প্রতিবছর ৭০ থেকে ৮০ টা খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে। এবার ৭৫ টা খেজুর গাছ মালিকদের কাছে থেকে প্রতি গাছ ২ কেজি গুড় দিবে বলে বর্গা নিয়েছে। কার্তিক মাসের শুরু থেকেই তিনি আগাম রস পাওয়ার জন্য গাছ প্রস্তুত করছে। তিনি প্রতি বছর গুড় থেকে ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় করে থাকে।

    বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপ-পরিচালক ডা.মতলেবুর রহমান জানায়, জেলার খেজুর গাছ চাষিদের বিভিন্ন সময়ে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দুপচাঁচিয়া, কাহালু ও আদমদিঘী উপজেলায় খেজুরের গাছ বেশি রোপণ করা হয়েছে। জেলায় খেজুরের রস ও লালি, গুড়ের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় বাজার জাতকরণ করা হয়ে থাকে বলে জানান তিনি।

    এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।জরুরী প্রয়োজনে আমাদের হেল্পলাইন নাম্বারে কল করুন-01912.473991 অথবা আমাদের জিমেইলে পাঠান-amardeshpbd@gmail.com

    Design & Developed by BD IT HOST