মুরাদ খান মানিকগঞ্জ
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী গুলিতে হেফাজতে ইসলামের চার কর্মী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৯০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমকে প্রধান আসামি করে সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২০১৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার গোবিন্দল গ্রামে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী গুলি করে চারজনকে গণহত্যার ঘটনায় মানিকগঞ্জ জুডিশিয়াল আদালতে এই হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
গত বুধবার (৯ অক্টোবর) বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাহুলদের আদালতে শহীদ মাওলানা নাসির উদ্দিনের ভাই মো. শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে সাবেক এমপি মমতাজ বেগমসহ আওয়ামী লীগের ৫২জন নেতাকর্মী ও ৩৮জন জন পুলিশ সদস্য এবং অজ্ঞাত আরো ৫০/৬০ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। যার সি আর মামলা নং ৮০১( সিং-২৪)।
মামলার বাকি আসামিরা হলেন, সাবেক পৌর মেয়র মীর মো. শাহজাহান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান খান হান্নান, সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বলধরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মাজেদ খান, সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান ওরফে ভিপি শহীদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সায়েদুল ইসলাম, সিংগাইর পৌর মেয়র আবু নঈম মো. বাশার, পৌর কমিশনার আব্দুস সালাম খান, সমেজ উদ্দিন, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রমেজ উদ্দিনসহ ৫২ জন।
পুলিশ সদস্যরা হচ্ছেন, তৎকালীন দায়িত্ব থাকা মানিকগঞ্জ সদরের সার্কেল, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ ডিবি পুলিশের ওসি মো. মহিবুল আলম, মদন মোহন বণিক, মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, সিঙ্গাইর থানার এস আই আদিল মাহমুদ, মোজাম্মেল হোসেন সহ ৩৮ জন।
জানা যায়, ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন গণজাগরণ মঞ্চ থেকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে কটুক্তি ও ইসলামবিদ্বেষী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে একই বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার উপজেলার গোবিন্দল থেকে হেফাজতে ইসলামের একটি প্রতিবাদ মিছিল বের হয়ে গোবিন্দল বাজারের দিকে যায়। সেখানে আগে থেকেই আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা বিদেশী ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ পুলিশ বাহিনীর সাথে উপস্থিত ছিলেন। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের কিছু সংখ্যক নেতাকর্মী পুলিশের পোষাক পরিহিত অবস্থায় বিনা উস্কানিতে নিরহ গ্রামবাসীর উপর গুলি চালায়।
ওই ঘটনায় গোবিন্দল গ্রামের মাওলানা নাসির উদ্দিন, আলমগীর হোসেন, নাজিম উদ্দীন ও শাহ আলম শহীদ হয়। আহত হয় আরো অর্ধশতাধিক। সে সময় আহত ও নিহতদের পরিবার সরকারি দলের দাপটে ও পুলিশের বাধায় মামলা করতে পারেনি। উল্টো গোবিন্দল গ্রামবাসী ও স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের শতাধিক নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়। ঘটনার প্রায় ১ যুগ পর মানিকগঞ্জ বিজ্ঞ জুডিশিয়াল আদালতে হামলায় জড়িত ততকালীন পুলিশ কর্মকর্তা ও সিঙ্গাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হল।