লেখক ঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম।
তারিখ ঃ ১২.০৫.২০২৪
জাতিসংঘের সাধারন পরিষদের ভোটাভুটি তে ফিলিস্তিন কে ১৪৩ দেশের সমর্থনে স্হায়ী সদস্য করা হয়েছে! জাতিসংঘের সদস্য মোট ১৯৩ দেশ, ২৫ দেশ ভোট দানে বিরত ছিলো এবং ৯ টা দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররা বিপক্ষে ভোট দিয়েছে!
প্রিয় পাঠক, জাতিসংঘের সভায় ইসরায়েলের রাস্ট্র দূত “গিলাদ এরদান” তাদের সদস্য সনদ ছিড়ে ফেলেন! এত সাহস, স্পর্ধা কোথায় পায়? আপনি হয়তো বলবেন, মার্কিন যুক্তরাস্ট্র! কথাটা শতভাগ কি ঠিক? আমি বলি বিশ্ব ৫৭ টা মুসলিম রাস্ট্র একটা মাত্র ইহুদি রাস্ট্র, ২৩% মুসলমান, ০.০২% ইহুদি! মুসলমান দেশগুলোর নতজানু পররাষ্ট্র নীতি এজন্য দায়ী, ইসলাম বিহীন মুসলমানিত্ব ভ্রাতৃপ্রেমী করে না! তাই বাংলাদেশের কোন মুসলমান মার্কিন রাস্ট্র দূত “পিটার হাস” কে নির্লজ্জের মত জনসভায় “ভগবান” বলে! ইরান আর বাংলাদেশ ছাড়া সবাই মার্কিন কে ভগবান মানে এজন্য ইসরায়েলের রাস্ট্র দূত জাতিসংঘে বসে “সনদ” ছেড়ার সাহস পায় যেমন সাহস পেয়েছিল ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী “জুলফিকার আলী ভুট্টা” পোল্যান্ডের দেয়া বাঙালি হত্যা বন্ধের প্রস্তাব!
আমরা কি কেউ কুরআন বাইবেল গীতা তানাখ মেনে ধর্ম করি! সব ধর্মগ্রন্থ মানবতা মনুষ্যত্ব শিক্ষা দেয়, কোন ধর্মের লোক কি মানবতা বাদী, তা হলে কি বিশ্বে এত লোক হত্যা হয়, কিভাবে শুধু ধর্মীয় বৈষম্যের জন্য নৃশংস হত্যা কান্ড! ধর্ম কি? একটা বিশ্বাস, কে দেখেছেন আল্লাকে, ভগবান কে, ঈশ্বর কে? সব ধর্মের প্রফেট দেখেছেন, আমি আপনি তো দেখি নাই!
এই বিশ্বাসের পার্থক্যে হিটলার ৬০ লাখ ইহুদি মেরে ফেললো, ইয়াহিয়া খান ৩৫ লাখ বাঙালি মেরে ফেললো, ‘বাঙালিরা মুসলমান’ একথা আজও কি পাকিস্তান এবং এদেশে তাদের এজেন্ট রা মেনে নিয়েছে? “টেংরিজম” ধর্মের অনুসারী চেঙ্গিস খান প্রায় ৪ কোটি মানুষ হত্যা করেছিলো, ১ কোটি ৬০ লক্ষ মাইলের মত রাজ্য বিস্তার করেছিলেন সেই এশিয়া থেকে ইউরোপের পোল্যান্ড রুমানিয়া পর্যন্ত! প্রায় ৮৫ লক্ষ মুসলমান হত্যা করেছিলেন (চেঙ্গিস খানের ইতিহাস স্হিতি না)! এমনি শুধু মাত্র ধর্মীয় বিভাজনে বিশ্বে কোটি কোটি লোক হত্যা হয়েছে, আজ-ও হচ্ছে!
বিশ্বে আল্লাহ অনেক জ্ঞানী গুনি শিল্পী সাহিত্যিক লেখক কবি বিজ্ঞানী দার্শনিক বৈজ্ঞানিক পাঠিয়েছেন! তারাই আপনাকে আকাশে উড়তে সাহায্য করছে, ১০ দিনের পথ এক ঘন্টায় অতিক্রম, সাগরের নিচে টানেল করা, নদীর উপর ব্রিজ করা, গরমে ঠান্ডা খাওয়া, বিদ্যুৎ আবিষ্কার, পরমাণু অস্ত্র বিদ্যুৎ মিশাইল বানানো শিখিয়েছেন, সে-সব জ্ঞানী গুনি রা তাদের ধ্যানে আকাশে উড়ার ব্যবস্হা করেছেন কিন্তু কোন ধর্ম পান নাই, বিশ্বাস ও করেন নাই। আইনস্টাইন, রবীন্দ্রনাথ, শেলি, কার্ল মার্ক্স, আলেক্স হেলি, জিওফ্রে, শেক্সপিয়ার, ওমর খৈয়াম, বেন জনসন, ওমর শরীফ, মাইকেল ফ্যারাড, নিউটন, প্লুটো, সক্রেটিস (৩ হাজার বছর আগের মহাজ্ঞানী) এমন শত-শত মহাজ্ঞানী লোকের অবদানে আপনি আমি আরামে খাচ্ছি, ফসল ফলানো থেকে আকাশে উড়ছি, তারা কেউ ধর্মের বিভাজন মানেন নাই, তারা “মানবতাকে” ধর্ম মেনেছেন, মাথায় টুপি, লম্বা জামা পরে পরের স্ত্রী নিয়ে মদের রিসোর্টে যান নাই অর্থাৎ পঞ্চম ইন্দ্রের বা ষড়রিপুর সেবা করেন নাই, বাবরি মসজিদ আর রাম মন্দিরের ভিতর বেহশতে স্বর্গ মানেন নাই, কুরআনে বলা হয়েছে, “আমার বান্দার সরিষা পরিমান ক্ষতি করলে তোমার ক্ষমা নাই! ঐ সব উল্লেখিত মহাজ্ঞানী জন কোন মানুষের বিন্দু পরিমান ক্ষতি করেন নাই বরং মানব উপকারে জীবন ব্যয় করেছেন, নারী সৌন্দর্য ভেবে কামুক হন নাই। আপনি আমি দারুন হিন্দু দারুন মুসলমান দারুন বৌদ্ধ দারুণ খৃষ্টান, মানুষের রক্তে করি স্নান! মসজিদ মন্দিরের ক্যাশ চুরি করতে বিবেকে বাঁধে না, নারী পেলে হুশ জ্ঞান থাকে না! আবার কবি সাহিত্যিক প্রগতিশীল জ্ঞানী কে নাস্তিক বলতে বিবেকের দংশন হয় না!
প্রিয় পাঠক, ঈমান মজবুত না হলে, মানবতা মনুষ্যত্ব অর্জন না হলে শো ধর্মে হানাহানি মারামারি হত্যা রাহাজানি চলবে, এমনি ইসরায়েল রাস্ট্র দূত “গিলাদ এরদান” স্পর্ধা দেখিয়ে জাতিসংঘের মত জায়গায় দাড়িয়ে “সনদ ছেড়ার সাহস পাবে”! ইরানের মত মুসলমান হোন, মিশাইলের জবাব ড্রোনে দেন, হিসাবে গুনবেন তারা! শুরু হয়েছে বাহরাইন থেকে ইসরায়েলে হামলা, লেবানন থেকে হিজবুল্লার হামলা, ইমেন থেকে হুতির হামলা (বন্ধ করে দিয়েছে লোহিত সাগরে শীপ চলাচল), ইরাক থেকে প্রতিরোধ বাহিনীর হামলা, গাজায় তো হামাস জীবন দিতেছে। আপনি-ও এগিয়ে আসুন, জর্ডানের মত ইরানের ড্রোন ভূপাতিত করবেন না ইসরায়েলের পক্ষে, শুধু মাত্র দেশের ক্ষমতায় যেতে ” পিটার হাস” ভগবান বলবেন না! কেমন মুসলমান আপনি, তসলিমা নাসরিন কে দেশ ছাড়া করার আগে আপনাকে বিমানে তুলে দেয়া উচিৎ বঙ্গবন্ধু যেমন দাউদ হায়দার (সম্ভাবত) কুরআন কে কটাক্ষ করার জন্য লন্ডন ফ্লাইটে তুলে দিয়েছিলেন! আপনি মুসলমান পরিচয় দিয়ে ধর্ষক নারী ভোগী পতিতালয়ে গ্রেফতার ব্যক্তির জেল মুক্তির দিন জেল গেটে ফুলের মালা নিয়ে আলিম ওলামা পরিচয় দিয়ে দাড়িয়ে থাকেন! কিসের মুসলমান আপনি, শুধু লেবাসধারী?
তাইতো ৫৭ টা মুসলমান দেশ একটা ইহুদি দেশের কাছে শির নত করে প্রনাম করতে হয়! জাতিসংঘে এতগুলো মুসলিম দেশের সামনে “গিলাদ এরদান” সনদ ছিড়তে সাহস পায়!