পাবনা প্রতিনিধি: পাবনার প্রভাবশালী এক কাজীর বিরুদ্ধে বাল্য বিবাহ, অত্যাধিক সহকারি কাজী নিয়োগ এবং কাবিন নামা জালিয়াতির মাধ্যমে দেনমোহর পরিবর্তন ও জালিয়াতির করে বিবাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগ পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগে জানা যায়, পাবনা সদর উপজেলার দোগাছী ইউনিয়নের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম কৌশলে
ভাড়ারা ইউনিয়নে বাসিন্দা দেখিয়ে ভাড়ারা ইউনিয়নের বিবাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগ নিয়ে আসেন। অথচ ভাড়ারা ইউনিয়নের কোলাদী গ্রামের মৌলভী আবু ইউসুফ নিকাহ রেজিস্ট্রার বহাল ছিলেন।দোগাছী ইউনিয়নের আনোয়ার পাশার পুত্র শফিকুল ইসলামের লাইসেন্স বাতিলের জন্য হাইকোর্টে রিট মামলা দায়ের করেন যাহা অদ্যাবদি বিচারাধীন রয়েছে। বিতর্কিত ও বহিরাগত কাজী শফিকুল ইসলাম পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স বীমা কোম্পানিতে চাকরির সুবাদে পাবনা শহরের মনসুরাবাদ আবাসিক এলাকায় বাসা ভাড়া করে পরিবার সহ বসবাস করেন।
এ প্রসঙ্গে বিচার ৭/২এন ০২/২০৬-২৪০ নং স্মারকে সিনিয়র সহকারী সচিব,আইন ও বিচার শাখা -০৭- জনাব বুলবুল আহমেদ স্বাক্ষরিত ১১/০৪/২০১৮ ইং তারিখের চিঠিতে সহকারী কাজী সৃষ্টি করে বিবাহ নিবন্ধন বন্ধ করার নির্দেশ বহাল থাকা সত্ত্বেও উক্ত শফিকুল ইসলাম ভাঁড়ার ইউনিয়নের একাধিক ব্যক্তিকে অর্থের বিনিময়ে সহকারী কাজী নিয়োগের মাধ্যমে বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রি কার্যক্রম পরিচালনা করিয়া আসিতেছেন।যাহা সম্পূর্ণ আইনগত নিষিদ্ধ ও বেআইনি। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিয়োগকৃত নায়েবে কাজী ও সহকারী কাজী গণ প্রেস থেকে আহরিত বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রি বালাম বহি হাতে পাইয়া বাল্য বিবাহ, ডিভোর্সী মেয়েদের ইদ্দত পুরন না হওয়া সত্ত্বেও শরীয়ত বহির্ভূত বিবাহ দেয়া, কাবিন নামায় দেনমোহর জালিয়াতি করা,একই বিবাহ অর্থের বিনিময়ে দ্বিতীয়বার রেজিস্ট্রি করা সহ সকল প্রকার অনৈতিক কাজ করে যাচ্ছেন। এমনকি জানা যায় তাহারা সীল মোহর বানাইয়া শফিকুল ইসলামের স্বাক্ষর নিজেরাই করে থাকেন। ইতিপূর্বে জেলা রেজিস্ট্রার গণকে এ ব্যাপারে অবহিত স্বত্বেও অজ্ঞাত কারণে তাহার নীরবতার পালন করছে। সম্প্রতি এক ঘটনায় জানা যায়, ভাঁড়ারা ইউনিয়নের খয়ের বাগান উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল মালেক নামক নায়েবী কাজী বিগত ২৫/০৭/২০২০ ইং তারিখে হাফেজ আব্দুল্লাহ রাকিবের (১৮) এর সাথে মহাদেব পুর গ্রামের জান্নাত শেখের (১৪) বৎসর বয়সী নাবালিকা কন্যার সাথে ৭০,০০০/- সত্তর হাজার টাকা নগদ দেন মোহরে বিবাহ পড়াইয়া রেজিস্ট্রী করেন। উভয়েরই বাল্য বিবাহের কারণে ঐ সময় নায়েবী কাজী বিবাহের সত্যায়িত কপি (নিকাহ নামা) সরবরাহ করেন নাই। ঘটনাক্রমে এই দম্পতির বাল্য বিবাহ হওয়ায় স্বামী স্ত্রীর দায়দায়িত্ব জ্ঞান অপরিপক্কতার কারণে সাংসারে সুখের বনিবনা না হওয়ায় এক পর্যায়ে গত ০৩/১০/২০২২ ইং তারিখে আব্দুল্লাহ রাকিব তার স্ত্রী সুমাইয়া কে তালাকের মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটান।দেন মোহর পরিশোধ থাকায় কনে পক্ষ আইনী পদক্ষেপ নিতে পারবেন না বিধায় পুনরায় গত ২০/০৪/২০২৩ ইং তারিখে উক্ত বিবাহের কাবিন কেরামতির মাধ্যমে নগদ সত্তর হাজার টাকার স্থলে চার লাখ টাকা দেনমোহর বসাইয়া একটি কাবিন নামার কপি কনে পক্ষ কে সরবরাহ করিয়াছেন বলে অভিযোগ করেন, ভুক্তভোগী বরের বাবা আব্দুল আলিম।
অথচ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয়ের কার্যালয়ের ২২/০৫/২০১৪ ইং তারিখের ০৩.০১২.০০৬.০০.০১৫.২০১৪-১০৮ নং স্মারকে একই বিবাহ বিষয়ে পৃথক ধরনের কাবিন নামা তৈরি না করার আদেশ করা হইয়াছে।এ বিষয়ে কাজী শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল মালেক নামে একজন নায়েবী কাজী ঐ এলাকায় কাজ করেন আর কোলাদী গ্রামের আবু ইউসুফ হুজুরের ছেলেরা দীর্ঘদিন ধরে গোপনে বিবাহ রেজিস্ট্রি করে আসছে।
নায়েবী কাজী আব্দুল মালেক কে একাধিক বার ফোন করে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় জেলা রেজিস্ট্রার বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।