মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় কালিগঙ্গা নদীতে চলমান অবৈধ ড্রেজারের সংবাদ সংগ্রহক করতে গিয়ে “ভোরের কাগজের মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি সুরেশ চন্দ্র রায়” ড্রেজার ব্যবসায়ীর হাতে লাঞ্চিত হয়েছেন ।
লাঞ্ছিত সাংবাদিক জানান, উপজেলার সিংজুরি ইউনিয়নের আশাপুর সড়কঘাটা ও মির্জাপুর এলাকার কালিগঙ্গা নদীতে রতন মেম্বার ও সানোয়ার পীরসাবের দুটো অবৈধ ড্রেজার দীর্ঘদিন চলমান রয়েছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে তথ্য সংগ্রহ করতে যান। ঘটনাস্থলে গিয়ে চলমান ড্রেজারের ছবি, ভিডিও ও তথ্য সংগ্রহ করে চলে আসার সময় সিংজুরি ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার ও ড্রেজার ব্যবসায়ী রতন মিয়া বাধা দেন। এবং বিশ হাজার টাকা অফার করে তাঁর মোবাইলে ধারণকৃত তথ্য ড্রেজারের ছবি, ভিডিও ও ডকুমেন্ট কেটে ফেলতে বলেন। প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিতে চায়। মোবাইল দিতে না চাইলে রতন মেম্বার, তার ভাই আলামিন ও ড্রেজারের শ্রমিক শাহআলম তাঁকে শারীরিক নির্যাতন করতে থাকেন। প্রাণে বাঁচতে এবং ড্রেজারের ডকুমেণ্ট রক্ষা করতে মোবাইলটি তামাক ক্ষেতে ছুড়ে ফেলেন এবং উচ্চ স্বরে চিৎকার করতে থাকেন।সাংবাদিকের চিৎকারে এলাকার লোকজন ছুটে আসলে ড্রেজার ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। বিষয়টি ঘিওর থানার অফিসার ইনচার্জ সুকুমার বিশ্বাসকে অবহিত করলে তিনি থানা থেকে ফোর্স পাঠান। ফোর্সের সহায়তায় পুনরায় ঘটনাস্থলে গিয়ে তামাক ক্ষেত থেকে মোবাইটি উদ্ধার করা হয়। পরে, হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে থানায় গিয়ে তিনি জিডি করেন। জিডি নং-৫৭১।
আশাপুর সড়কঘাটা এলাকার স্থানীয়রা জানান, রতন মেম্বার ও সানোয়ার পীরসাব দীর্ঘদিন যাবৎ কালিগঙ্গা নদী থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করছেন, কিন্তু রহস্যজনক কারণে এপর্যন্ত প্রশাসন এখানে কোন অভিযান করেনি। এ ন্যকারজনক ঘটনার পরও থেমে নেই রতন ও সানোয়ার পীরসাবের ড্রেজার ব্যবসা। রতন মেম্বারসহ দোষীদের দৃষ্টান্ত শাস্তি ও চিরতরে কালিগঙ্গায় ড্রেজার বাণিজ্য বন্ধের দাবি করেন এলাকাবাসি।
সিংজুরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুর রহমান মিঠু জানান, রতন মেম্বার দীর্ঘদিন যাবৎ ড্রেজার ব্যবসার সাথে জড়িত। এব্যবসা না করার জন্য তিনি অনেকবার রতন মিয়াকে নিষেধ করেছেন,কিন্তু তিনি কর্ণপাত করেননি। রতন মেম্বার একজন সাংবাদিকের গায়ে হাত দিয়ে অত্যন্ত খারাপ কাজ করেছেন। তিনি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।
ঘিওর থানা অফিসার ইনচার্জ সুকুমার বিশ্বাস বলেন, একজন সাংবাদিক ঘটনাস্থলে গিয়ে তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করবেন,এটাই স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে যদি সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হন-সেটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং শতভাগ অন্যায়। এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এবিষয়ে বক্তব্য নিতে ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক রেহেনা আক্তার বলেন, বিষয়টি তিনি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন।