হারুন অর রশিদ
স্টাফ রিপোর্টার
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার জিন্দারপুর ইউনিয়নের মোস্তশা মোড় এলাকায় একটি কালভার্টের মুখ বন্ধ করে পাকা বসতবাড়ী নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে বদরুজ্জামান নামের এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে । এতে করে ঐ এলাকার কয়েকটি গ্রামের প্রাই কয়েক’শ একর ফসলি জমির পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়েছে। এতে করে ওই এলাকার লোকজনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বদরুজ্জামান আকন্দ পার্শ্ববর্তী বাদাউচ্চ উচ্চ গ্রামের মৃত আনছার আলী আকন্দের ছেলে।
স্থানীয়রা বলছেন, বর্ষা মৌসুমে ওইসব মাঠের পানি অপসারণ করতে না পারলে ফসল তলিয়ে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এখনই কালভার্টের মুখ খোলার ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আগামী বর্ষা মৌসুমে কোটি কোটি টাকার ফসল নষ্ট হবার আশঙ্কা রয়েছে ।
কালাই উপজেলা প্রকৌশল অফিস ও স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে বর্ষাকালে উপজেলার পাঁচগ্রাম, মাদারপুর, এলতা ও ইমামপুর গ্রামের প্রায় এক হাজার একর জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছিল। এ সমস্যা দূর করতে এলাকার কৃষকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে করিমপুর-পাঁচগ্রাম সড়কে স্থানীয় প্রকৌশল বিভাগ একটি কালভার্ট নির্মাণ করেন। এরপর থেকে বর্ষা মৌসুমের জমে থাকা পানি ওই কালভার্ট হয়ে দ্রুত নেমে যায় স্থানীয় হারাবতী খালে। কয়েক মাস আগে কালভার্টের উত্তর পাশের মুখ বন্ধ করে এর কোল ঘেঁষে স্থায়ী পাকা বসত বাড়ী ও সীমান প্রাচীর নির্মান কাজ শুরু করেন বদরুজ্জামান আকন্দ। এতে কালভার্টের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে আগামী বর্ষা মৌসুমে আবারও বৃষ্টির পানি জমে এসব মাঠের ফসল তলিয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েই গেল। কৃষকরা জানান, এ ব্যাপারে বেশ কয়েকজন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে অবগত করলেও কোন কাজ হয়নি। বন্ধ হওয়াতো দুরের কথা,চেয়ারম্যানকে জানানোর পর উল্টো সেখানে কাজের গতি আরও বেড়েগেছে ।
পাঁচগ্রামের কৃষক জালাল উদ্দিন, জালাইগাড়ির কৃষক বেলাল হোসেন, এলতা গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলামসহ অনেকেই জানান, কয়েকদিন আগে তারা স্থানীয় জিন্দারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়াকে বিষয়টি অবগত করেছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত তিনি কালভার্টের বন্ধ মুখ খোলার কোন পদক্ষেপ নেননি। এ বিষয়ে তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিবেন বলেও জানান।
বেগুনগ্রামের কৃষক সাজ্জাদুর রহমান বলেন, যেভাবে কালভার্টের মুখ বন্ধ করেছে তাতে মনে হচ্ছে আর কোন দিনও এই কালভার্ট দিয়ে পানি চলাচল করবে না। ফলে তিন ফসলি জমিতে ধান, আলুসহ কৃষি পণ্য উৎপাদন ব্যহত হবে।
অভিযুক্ত বদরুজ্জামান আকন্দ কালভার্টের মুখ বন্ধ করে বাড়ী নির্মাণের কথা স্বীকার করে বলেন, বর্তমানে মাঠে পানি নেই, তাই মুখ বন্ধ করে দিয়েছি। বর্ষার আগেই আবার খুলে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে বর্ষা মৌসুমের জমে থাকা পানি আমার বাড়ীর ভিতর দিয়েই পার হয়ে যাবে। তাতে আপনরা কি ?
জিন্দারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, কৃষকরা আমাকে বলেছে, আমি ওই বাড়ীর মালিককে নিষেধও করেছি। তারপরও বাড়ীর মালিক কাজ চলমান রেখেছে। আমি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানাবো।
কালাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুল হায়াত বলেন, এ বিষয়ে আমাকে কেউ অভিযোগ করেনি। খোঁজ নিয়ে দ্রুত কালভার্টের মুখ খোলার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।