মুরাদ খান মানিকগঞ্জ থেকে
ইট প্রস্তুত লাইসেন্স ছাড়াই চলছে মের্সাস হাজী ব্রিকস। ভাটার কালো ধোঁয়ায় বিপন্ন পরিবেশ। হুমকিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা।
জানাগেছে, হাজী ব্রিকস দুই বছর আগে ছিল এফবিসি ব্রিকস। তখন মুল মালিকের কাছ থেকে আশুলিয়ার এক ব্যক্তি এফবিসি ব্রিকস ক্রয় করে নেয়। ওই সময় ভাটার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় এফবিসি ব্রিকসকে ১ লক্ষ টাকা জরিমান করেন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু রাতারাতি সেই ভাটার নাম বদলে হয়েছে হাজী ব্রিকস। বর্তমানে ধামরাই উপজেলার আবু বক্কর নামের এক ব্যক্তি ইট প্রস্তুত আইন না মেনে হাজী ব্রিকস নামে পরিচালনা করছে।
অভিযোগ, বিষয়টি অবগত থেকেও নির্বিকার স্থানীয় প্রশাসন ও জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর। অথচ ইটভাটা প্রস্তুত ও নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৩ তে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, জনবসতিপূর্ণ এলাকা (আবাসিক, সংরক্ষিত বা বাণিজ্যিক) আশপাশে ইটভাটা করা যাবে না। কিন্তু এসব নিয়ম-নীতির কোনো তোয়াক্কাই করছেন না ভাটার মালিক মোঃ আবু বক্কর।
জানা যায়, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার আট্রিগ্রাম ইউনিয়নের ভগবানপুর ঘনবসতি এলাকায় কৃষি জমিতে ইটের ভাটা তৈরী করেছে ধামরাই উপজেলার আবু বক্কর নামের এক ব্যক্তি। ইট প্রস্তুতে শর্তে ইটভাটায় কোন অবস্থাতেই জ্বালানি কাঠ ব্যহার করা যাবে না। জেলা প্রশাসকের অনুমোদন ব্যতিত ইট প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যে মজাপুকুর, খাল- বিল, দিঘি-নালা, নদ-নদী, হাওড়, চরাঞ্চল বা পতিত জায়গা হতে মাটি কাটা যাবে না। ইটভাটায় ইট পোড়ানো কাজে নির্ধারিত মান মাত্রার সালফার, অ্যাশ, মারকারি বা অনুরুপ উপাদান সম্বলিত কয়লা জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না। যার কোনটাই মানছেন না হাজী ব্রিকস। জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়াই পুরোদমে চলছে ইট প্রস্তত কাজ। ফজলি জমি থেকে কাটা হচ্ছে মাটি। অথচ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগ রয়েছে, প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সংস্থাকে ম্যানেজ করেই হাজী ব্রিকস পরিচালনা করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অনেকটাই অপারগ।
হাজী ব্রিকসের প্রোপাইটর আবু বক্করের মুঠোফোনে একাধীকার ফোন করে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে ভাটার ম্যানেজার শাহীন বলেন, আমাদের সকল কাগজপত্র আছে। তবে আপনাদের দেখানো যাবে না। ধামরাইতে আমাদের কোম্পানির আরেকটি ভাটা আছে হাজী ব্রিকস নামে। আর মাটি সরাসরি আমরা কাটি না। কন্ট্রাকটরের মাধ্যমে নেই।
তবে ভাটার মুল মালিক যিনি ছিলেন রফিকুল ইসলাম নপু তিনি বলেন, আমার জানামতে তাদের ডিসির অনুমতির কাগজ নেই। পরিবেশের ছাড়পত্র দিয়েই হয়তো চলছে। শুনেছি লাইসেন্সের জন্য ডিসি অফিসে আবেদন করেছে।
এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর মানিকগঞ্জ কার্যালয়ের উপ পরিচালক ড. মো: ইউসুফ আলী বলেন, শুধু পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়েই ইট প্রস্তুত কিংবা পোড়ানো যাবে না। জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স বাধ্যতামূলক। আমি নতুন যোগদান করেছি। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, কোন ব্যক্তি ভাটার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া কোনক্রমেই ইট প্রস্তত করতে পারবে না। যদি ওই ভাটা অবৈধভাবে পরিচালনা করে থাকে তাহলে তদন্ত পূর্বক আইনুনগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।