মোঃ সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন, রাজশাহী:
দীর্ঘদিন এমপির সাথে থেকেছি। নৌকার পক্ষে শপথ করিয়ে নেয়ার পরেও কেনো সে বিদ্রোহী ভোট করে আমার নিরীহ সাওয়ালকে মেরেছে। নৌকার ভোট করার কারণে আমার মেয়েকে এভাবে মেরে অজ্ঞান করেছে।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের সমর্থকদের হামলায় গুরুতর আহত (অচেতন) অবুঝ শিশু কন্যাকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার সময় ফেসবুক লাইভে এসে বাগমারা উপজেলার হামিরকুৎসা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম কান্নাজড়িত কণ্ঠে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের বোন বেবি আক্তার ও তার সহযোগী শাফিনুর নাহারসহ কয়েকজন আমার বাড়ির পাশে এসে আমার অবুঝ শিশুটিকে মেরে শেষ করে ফেলেছে। এমপি এনামুলের ১৫ বছর রাজনীতি করেছি। তিনি শিক্ষা দিয়েছেন যে, আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের বাইরে কাউকে না যেতে। তিনি আমাদের নৌকার বিপক্ষে না যাওয়ার জন্য শপথও করিয়েছেন। সঙ্গত কারণে আমরা নৌকার বাইরে যেতে পারিনি। তিনি নৌকা প্রতীক না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করছেন। এই ক্ষোভে তিনি মহিলা সন্ত্রাসীদের দিয়ে আমার মেয়ের ওপর হামলা চালিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘মেয়ের ওপর হামলা হওয়ার পর হারিমকুৎসা থেকে মেয়েকে নিয়ে বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। কিন্তু সেখানে অক্সিজেন লাগিয়ে মেয়েকে নিয়ে এখন রাজশাহী মেডিকেলে যাচ্ছি। আপনারা সবাই আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন।
লাইভে এসে তিনি আরো বলেন, ‘হায়রে এমপি এনামুল। আপনার জন্য কী করিনি। আপনি হাত জাগিয়ে শপথ করিয়েছেন যে, ‘দলের থেকে যে নির্দেশ আসবে সেই নির্দেশ অনুযায়ী আমাদেরকে কাজ করতে হবে। নৌকার বিজয় করে ঘরে ফিরতে হবে। এই শপথ করিয়ে নিয়ে আপনি আজ কেন বিদ্রোহী? আজ কেন আমরা মার খাচ্ছি? যেই শাফিনুর আপনার বিরুদ্ধে ঝাটা মিছিল করলো, আপনি তাকে বুকে টেনে নিলেন। আর আপনার যারা পক্ষে ছিল তাদের ওপর এবং তার সন্তানদের ওপর হামলা করছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলবো, বঙ্গবন্ধুর নৌকার বিজয়ের লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি, আর স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুলের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে।’
জানতে চাইলে নৌকার রাজশাহী-০৪ (বাগমারা) আসনের নৌকার প্রার্থী অধ্যক্ষ মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আগে এমপি এনামুল ভেবেছিল সে এবারো নৌকা প্রতীক পাবে। এজন্য তিনি ওই সময় দলীয় নেতাকর্মীদের শপথ পড়িয়েছিলেন যে, নৌকার বাইরে আপনারা কেউ যাবেন না। নেতাকর্মীরা হাত তুলে শপথ করেছিলেন। এখন যখন এনামুল নৌকা পায়নি তখন নেতাকর্মীরা স্বভাবতই নৌকার পক্ষে থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এতে উনি ক্ষেপে গিয়ে নৌকার পক্ষের লোকজনের ওপর হামলা চালাচ্ছে। বাগমারাকে অস্থিতিশীল করার পায়তারা করছে।’
জানতে চাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক জানান, আমার কর্মী-সমর্থকরা কারো ওপর হামলা করছে এটি সত্য না। বরং একের পর এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপরই কালামের সমর্থকরা হামলা চালাচ্ছে।