এডি প্রতিদিন//শেখ রুবেল আহমেদ
নির্বাচনি প্রচারণার সময় হেনস্তার শিকার হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন নায়িকা মাহিয়া মাহি। তাই মাঠে প্রচারণা চালাতে গিয়ে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত তিনি।
গতকাল শুক্রবার রাতে গোদাগাড়ী উপজেলার পালপুর এলাকায় তিনি হেনস্তার শিকার হন বলে জানিয়েছেন।
ঘটনায় রাতেই থানায় মামলা করতে যান মাহির লোকজন। তবে মামলা না নিয়ে পুলিশ নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
ওই ঘটনার পর গণমাধ্যম কর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো এক অডিও বার্তায় মাহিয়া মাহি বলেছেন, ‘আমি ভীতসন্ত্রস্ত। আর মাত্র ৬-৭ দিন আছে। আমার যত পথসভা হবে, হুট করে কে কখন ঢুকে যাবে। সাধারণ জনগণের সঙ্গে মিশে গিয়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করবে, এ নিয়ে আমি রিস্কে আছি।’
তিনি আরও বলেন, “গণসংযোগ করছিলাম আমি। গত দুদিন আগে একজন মানুষের কাছে আমি ভোট চাইতে গিয়েছিলাম। তখন একজন মহিলা আমাকে ডাকছিল তার কাছে যাওয়ার জন্য। তার কাছে গিয়ে আমি বিনয়ের সঙ্গে ভোট চাইছিলাম। এ সময় আরেকজন মহিলা এসে আমার ভিডিও করতে লাগল। এরপর তিনি আমাকে নানা কথা জিজ্ঞেস করতে লাগলেন। তিনি আমাকে প্রশ্ন করেন, ‘এ এলাকার জন্য কী করেছেন? করোনার সময় কী করেছেন?’ তিনি ভিডিওটা ফেসবুকে আপলোড করে দিয়েছিলেন। অনেকেই সেটা দেখেছেন। পরে আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, তিনি মহিলা যুব আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।’
শুক্রবার রাজশাহীর গোদাগাড়ীর পালপুর বাজারে গণসংযোগ করেছিলেন জানিয়ে মাহি বলেন, “বক্তব্য দেওয়ার সময় হঠাৎ করে একজন এসে ওই একই কথা। আমাকে জিজ্ঞেস করেন – ‘করোনার সময় আপনি কী করেছেন?’ তখন আমি বুঝতে পেরেছি, এটা একটা নির্দেশন আছে আমার গণসংযোগে হুটহাট ইয়ে করার। তখন তিনি বলছিলেন – ‘আপনি করোনার সময় কী করেছেন? এতদিন পর এলাকায় আসছেন!’ একটা পর্যায়ে তার সঙ্গে বাগবিতণ্ডাও হয়।’
“তখন তিনি আমাকে বলেন, ‘এটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিস, এখানে পথসভা করতে পারবেন না।’ তখন আমি বলেছি, এটা সরকারি রাস্তা। এখানে পথসভা কেন করতে পারব না? আপনি আমার প্রচারণায় বাধা দিচ্ছেন। আমি প্রশাসনকে জানাব। তখন তিনি বলেন, ‘আপনার প্রশাসন থাকলে আমাদেরও প্রশাসন আছে।’
তিনি বলেন, ‘একপর্যায়ে তিনি সবার সামনে আমাকে স্যরি বলেন। তারপর তারা উচ্ছৃঙ্খল আচরণ শুরু করে। বিভিন্নজনকে ফোন দিয়ে আসতে বলে। আমি শুনেছি- তারা বলছে, হুকুম দেন। খালি হুকুম দেন। তারা নাকি গাড়িতে ‘হুক’ নাকি কী যেন, নিয়ে আসছে। সেটাও ফোনে বলেছে। এ রকম সিচুয়েশন হলে আমি ইউএনও ও ওসিকে ফোন করেছি। তারা সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে আসেন। ’
রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মতিন বলেন, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে মাহিয়া মাহির ফোন পেয়ে তিনি ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সেখানে যান। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারা ফিরে আসেন। এ ঘটনায় রাতেই প্রার্থীর লোকজন মামলা করতে থানায় আসেন। তবে যে অভিযোগ নিয়ে আসেন সেটা সরাসরি মামলা হয় না। তাই তাদের অভিযোগটি নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির কাছে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
পরামর্শ দেওয়ার বিষয়টি নথিভুক্ত রাখতে পুলিশের পক্ষ থেকে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
রাজশাহী-১ (তানোর গোদাগাড়ী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ‘ট্রাক’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মাহিয়া মাহি। তার প্রতিপক্ষ হচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী এমপি।