নিজস্ব প্রতিবেদক শেখ রেজাউল করিম রুবেল
রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির জনসংযোগে বাধা প্রদান করায় প্রতিকার চেয়ে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে উপজেলার পালপুরে নির্বাচনী প্রচারণায় গেলে নৌকার সমর্থিত কর্মীরা তাকে এই বাধা প্রদান করেন।
এরই প্রেক্ষিতে তিনজনের নাম উল্লেখ করে শুক্রবার দিবাগত রাত ১ টার দিকে গোদাগাড়ী মডেল থানায় তিন জনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করেন। অভিযুক্তরা হলেন, দেওপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ও প্রেমতলী ডিগ্রী কলেজের ল্যাব-সহকারি রিজওয়ান, গোদাগাড়ী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি সালমান ফিরোজ ফয়সাল এবং রাজাবাড়ীহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মামুনুর রশিদ।
চিত্রনায়িকা মাহী বলেন, আমার কাছে তথ্য আছে যে আমি যেখানে যাব, সেখানে সাধারণ জনগণ সেজে একটা বিশৃঙ্খলা করবে। আমি ভীতসন্ত্রস্ত। কারণ আর মাত্র কয়টা দিন আছে। এর মধ্যে সাধারণ মানুষের মধ্যে কে কখন ঢুকে যাবে এবং বিশৃঙ্খলা করবে। তাই আমি প্রশাসনকে অনুরোধ জানাই তারা যেন এদিকে খেয়াল রাখেন।
তিনি আরো বলেন দুই দিন আগে আরেক স্থানে যুব মহিলা লীগের এক নেত্রীর তোপের মুখে পড়েন তিনি। এসব কারণে এখন নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়ে থাকার কথা জানিয়েছেন মাহি।
মাহির অভিযোগ, ভোটের মাঠে তাকে পরিকল্পিতভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করছেন নৌকার সমর্থকরা।
তিনি বলেন, ‘দুই দিন আগে এক হাটে আমি গণসংযোগে যাই। অটোরিকশায় বসে থাকা এক নারী আমাকে ডাকেন। তিনি যুব মহিলা লীগের নেত্রী। বারবার আমাকে জিজ্ঞেস করছিলেন, আমি এলাকার জন্য কি করেছি? করোনার সময় কি করেছি। সেই ভিডিও করে আবার ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
শুক্রবার রাতে আবার গোদাগাড়ীর পালপুর এলাকায় গণসংযোগ করছিলাম। আমার বক্তব্যের মাঝখানে একজন এসে আবার একই কথা বলেন, করোনার সময় কি করেছেন? আমি তখন বুঝতে পেরেছি এটা বলার নির্দেশনা আছে। এই কথা বলতে বলতে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তিনি বলেন, এটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিস। এই রাস্তায় আপনি গণসংযোগ করতে পারবেন না। আমি বলেছি, এটা সরকারি রাস্তা। কেন প্রচার করতে পারব না। আপনি আমাকে বাধা দিচ্ছেন।’
মাহি বলেন, ‘আমি প্রশাসনকে জানানোর কথা বলি। তখন সরি বলেছেন। আমি বললাম, ঠিক আছে সবার সামনে সরি বললে মাফ করে দেব। ফাইনালি তিনি সরি বলেন। কিন্তু সবাই মিলে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ শুরু করেন। ফোন দিয়ে লোকজন জড়ো করেন। কাকে যেন ফোনে বলছিলেন, হুকুম দেন খালি। হুকম যেন কি জিনিস, সেটা গাড়িতে করে নিয়ে আসছে। আমি ইউএনও-ওসিকে ফোন করে জানাই। পরে তারা আসেন।’
গোদাগাড়ী থানার ওসি আবদুল মতিন বলেন, ‘রাত ৯টার দিকে মাহিয়া মাহির ফোন পেয়ে আমি ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সেখানে যাই। এর পর পরিস্থিতি শান্ত করে আসি। এ ঘটনায় রাতেই প্রার্থীর লোকজন মামলা করতে আসেন। তবে যে অভিযোগ, সেটা সরাসরি মামলা হয় না। নির্বাচনী আচরণ বিধি সংক্রান্ত বিষয় তাই আমি তাদের পরামর্শ দিয়েছি নির্বাচন কমিশনের অনুসন্ধান কমিটিরি নিকট অভিযোগ দিতে। তারা যে নির্দেশনা প্রদান করবেন সেই অনুযায়ী আমি ব্যবস্থা নিবো।
যাযাদি/ এসএম