পার্থেনন ভাস্কর্য ফিরিয়ে নেওয়া সংক্রান্ত কূটনৈতিক বিতর্কের মাঝে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিসের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠক বাতিল করেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। মঙ্গলবার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।আড়াই হাজার বছরের পুরানো ভাস্কর্যগুলো স্থায়ীভাবে ফিরিয়ে দিতে ব্রিটিশ মিউজিয়ামকে তাগাদা দিয়ে আসছিল গ্রিস কর্তৃপক্ষ। অটোমান সাম্রাজ্যের রাষ্ট্রদূত থাকাকালে ১৯ শতকের গোড়ার দিকে ব্রিটিশ কূটনীতিক লর্ড এলগিন পার্থেনন মন্দির থেকে ভাস্কর্যের অংশগুলো নিয়ে আসেন।
মিৎসোটাকিস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পূর্ব নির্ধারিত বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বাতিল করেছেন। এতে আমি বিরক্ত।
তিনি বলেন, পার্থেনন ভাস্কর্য ইস্যুতে গ্রিসের অবস্থান সবার জানা। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনার সুযোগ পাব বলে আশা করেছিলাম। যার নিজের অবস্থানের সঠিক ও ন্যায়বিচারে বিশ্বাস করে তারা কখনওই যুক্তির মুখোমুখি হতে ভয় পায় না।
ভাস্কর্যগুলো দুই শতক ধরে দেশ দু’টির মধ্যে বিরোধের উৎস। তবে গ্রিক সরকার এ শিল্পকর্ম সম্ভাব্য ধার নেওয়ার বিষয়ে ব্রিটিশ মিউজিয়ামের প্রধান জর্জ ওসবোর্নের সঙ্গে আলোচনা করছে।এর আগে রবিবার বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মিৎসোটাকিস অভিযোগ করেন, এথেন্সে ভাস্কর্যগুলোর ফেরত নেওয়া প্রসঙ্গে আলোচনার গতি যথেষ্ট নয়। তার মতে, ব্রিটিশ মিউজিয়ামে ভাস্কর্যগুলোর অব্যাহত উপস্থিতি ‘মোনালিসাকে অর্ধেক কেটে ফেলার মতো’ এবং এটি মালিকানার প্রশ্ন নয় বরং ‘পুনর্মিলন’।এদিকে বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, ভাস্কর্য নিয়ে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীর আগাম মন্তব্যে বিরক্ত হয়েছেন ঋষি সুনাক। তাই বৈঠক বাতিল করেছেন তিনি। এর বদলে উপপ্রধানমন্ত্রী অলিভার ডাউডেনের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তাব দিলে প্রত্যাখ্যান করেন মিৎসোটাকিস। ঋষি সুনাকের এক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, ভাস্কর্যগুলো ফেরত দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী।মিৎসোটাকিসের বিবৃতি সম্পর্কে সুনাকের কার্যালয় বলছে, গ্রিসের সঙ্গে ব্রিটেনের সম্পর্ক ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ এবং অবৈধ অভিবাসন মোকাবেলার মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলোতে দুই দেশকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তাই ভাস্কর্য প্রসঙ্গ এড়িয়ে কথা বলতে চেয়েছিলেন সুনাক।ব্রিটিশ সরকার সবসময়ই মার্বেল মূর্তিগুলোর মালিকানা ছেড়ে দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে। বরং বলে থাকে যে ১৬০ মিটার মূর্তির অর্ধেক অংশটি আইনগতভাবে তারা অর্জন করেছে। সুনির্দিষ্ট পরিস্থিতি ছাড়া ব্রিটিশ মিউজিয়ামকে কোনও সংগ্রহ অপসারণে বাধা দেয় ব্রিটিশ আইন। তবে এতে ধার দেওয়া নিষিদ্ধ নয়।বিভিন্ন সময়ে তুলে নিয়ে আসা শিল্পকর্ম এখন সারাবিশ্বে আলোচনার বিষয়। এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশ এসব সম্পদ ফিরিয়ে দিতে রাজি হয়েছে। সেখানে স্পর্শকাতর বিষয়টি নিয়েই বাতিল হলো যুক্তরাজ্য ও গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক। সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি